আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা মানবজাতিকে তাঁর দয়াপ্রাপ্তির এক সহজ পথ দেখিয়েছেন – আর তা হলো দু'আ। দু'আ কেবল একটি প্রার্থনা নয়, বরং এটি ইবাদতের মূল নির্যাস, যা বান্দা ও রবের মাঝে এক সেতুবন্ধন তৈরি করে। এই মহিমান্বিত দু'আর সর্বশ্রেষ্ঠ রূপগুলো আল্লাহ তায়ালা নিজেই কুরআনুল কারীমে আমাদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছেন, যা নবী-রাসূলগণ বিশেষ পরিস্থিতিতে করেছিলেন। সেইসব দু'আ ও তার গভীর ব্যাখ্যা নিয়েই রচিত হয়েছে "কুরআনে বর্ণিত সকল দু'আ ও তার তাফসির"।

বাজারে দু'আ বিষয়ক অনেক বই থাকলেও, এই গ্রন্থটি নিঃসন্দেহে এক অনন্য সংযোজন। কারণ এটি কুরআনে বর্ণিত সকল দু'আকে একত্রিত করে নিপুণভাবে তাফসিরের আলোয় উদ্ভাসিত করেছে। লেখক মো: হাসিবুর রহমান, তাফসির ইবনে কাসিরসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য তাফসির গ্রন্থ থেকে গভীর জ্ঞান আহরণ করে প্রতিটি দু'আকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, যেখানে উঠে এসেছে নবী-রাসূলগণ কেন এবং কোন পরিস্থিতিতে এই দু'আগুলো করেছিলেন। এর মাধ্যমে কেবল দু'আ মুখস্থ করাই নয়, বরং এর প্রেক্ষাপট ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করা সহজ হবে, যা দু'আকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে।

শারঈ সম্পাদক শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী এর নিপুণ সম্পাদনায় বইটি আরও নির্ভরযোগ্য ও প্রামাণ্য হয়ে উঠেছে। এই বইটি উম্মাহর জন্য এক বিশাল উপকারী কাজ, যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আলোকিত প্রকাশনীকে করার তাওফিক দিয়েছেন, যার জন্য আমরা তাঁর অশেষ শুকরিয়া আদায় করি।

আমাদের বিশ্বাস, এই বইটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে এবং উম্মাহর জন্য মহাকল্যাণ বয়ে আনবে। কুরআনে বর্ণিত নবী-রাসূলদের দু'আগুলো জানার মাধ্যমে এবং সেভাবে দু'আ করার মাধ্যমে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবন কল্যাণময় হোক—এটাই আমাদের একান্ত প্রার্থনা। কারণ আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন, "তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো"। [সূরা মু'মিন/গাফির-৪০, আয়াত: ৬০] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "দু'আই হচ্ছে ইবাদাত"। [আবূ দাঊদ]